Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

ক্যান্সার, কিডনী ও লিভারসিরোসিস

রংপুর জেলায় ক্যান্সার, কিডনী, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদরোগ এবং থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের আর্থিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে

অনলাইন আবেদন লিংক: www.welfaregrant.gov.bd

প্রতিবছর দেশে প্রায় ৩ লক্ষ লোক এ সমস্ত রোগে মৃত্যুবরণ করে এবং ৩ লক্ষাধিক লোক ক্যান্সার, কিডনী, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হার্ট ও থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অর্থের অভাবে এসব রোগে আক্রান্ত রোগীরা যেমনি ধুঁকে ধুঁকে মারা যায়, তেমনি তার পরিবার চিকিৎসার ব্যয় বহন করে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে এ সকল অসহায় ক্যান্সার, কিডনী এবং লিভার সিরোসিস রোগে আক্রান্ত গরীব রোগীদেরকে এককালীন ৫০,০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করার লক্ষে সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের আওতায় কর্মসূচিটি বাস্তবায়নের জন্য এ কার্যক্রমটি  রংপুর জেলায় ও বাস্তবায়ন করছে। 

সংজ্ঞা

১. ক্যান্সার

বিশ্বের সমস্ত প্রাণীর শরীর অসংখ্যা ছোট ছোট কোষের মাধ্যমে তৈরি। এই কোষগুলো একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর মারা যায়। এই পুরনো কোষগুলোর জায়গায় নতুন কোষ এসে জায়গা করে নেয়। সাধারণভাবে কোষগুলো; নিয়ন্ত্রিতভাবে এবং নিয়মমতো বিভাজিত হয়ে নতুন কোষের জন্ম দেয়। সাধারণভাবে বলতে গেলে যখন এই কোষগুলো কোনো কারণে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে তখনই ত্বকের নিচে মাংসের দলা অথবা চাকা দেখা যায়। একেই টিউমর বলে। এই টিউমর বেনাইন বা ম্যালিগন্যান্ট; হতে পারে ম্যালিগন্যান্ট টিউমরকেই ক্যান্সার বলে। সংক্ষেপে বলতে গেলে, অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিভাজনক্ষম হয়ে বৃদ্ধি পাওয়া কলাকে নিয়োপ্লসিয়া (টিউমার) বলে এবং এই নিয়োপ্লসিয়ার ম্যালিগন্যান্ট রূপকে ক্যান্সার বলে।

২. কিডনী রোগ

কিডনী যখন তার কার্যক্ষমতা ক্রমান্বয়ে হারাতে থাকে তখন শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। যদি কিডনী রোগ বেশি বেড়ে যায় তখন রক্তে দুষিত পদার্থ বাড়তে থাকে এবং অসুস্থবোধ হতে থাকে। সেই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ, অ্যানিমিয়া (লাল রক্ত কনিকার স্বল্পতা), হাড় দুর্বলতা, পুষ্টিহীনতা, স্নায়বিক ক্ষতিগ্রস্ততা দেখা দিতে পারে। ক্রনিক কিডনি ডিজিজ হৃদরোগ ও রক্তনালির রোগ বৃদ্ধি করতে পারে। এসব রোগ এবং রোগের বৃদ্ধি ঘটতে থাকে ধীরগতিতে এবং অনেক দিন ধরে। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং অন্যান্য মেটাবলিক ডিসওয়ার্ডারের কারণে ক্রনিক কিডনি রোগ হতে পারে। প্রাথমিক অবস্থায় রোগ নির্নয় এবং চিকিৎসা করালে রোগ নিরাময় বা নিয়ন্ত্রণ বা আরো খারাপ হওয়ার দ্রুততাকে ধীরগতিসম্পন্ন করা যায়। যদি রোগ দ্রুত বাড়তে থাকে এবং এক পর্যায়ে কিডনি বিকল হয়ে পড়ে তখন কৃত্রিম উপায়ে অর্থাৎ ডায়ালাইসিস পদ্ধতিতে রক্ত পরিশুদ্ধের ব্যবস্থা করতে হয় এবং কিডনি প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে জীবন রক্ষা করা যেতে পারে।

৩. লিভার সিরোসিস:

সিরোসিস লিভারের একটি ক্রনিক রোগ, যাতে লিভারের সাধারণ আর্কিটেকচার নষ্ট হয়ে লিভারের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারায়। অনেক ক্ষেত্রেই লিভার সিরোসিস থেকে লিভারে ক্যান্সারও দেখা দিতে পারে।

৪. স্ট্রোকে প্যারালাইজড

হঠাৎ করে শরীরের যেকোন অংশের কর্মক্ষমতা কর্মক্ষমতা  হ্রাস অথবা পড়্গাঘাত হওয়া যা ২৪ ঘন্টার বেশী সময় ধরে থাকবে এবং যা মস্তিষ্কের রক্তনালীর জটিলতার কারণে সৃষ্ট (Stroke may be defined as sudden Neurological deficit which persist for 24hrs or patient may die within 24hrs which is non traumatic vascular origin)।

৫. জন্মগত হৃদরোগ

জন্মের সময়ই শিশুর হৃদপিন্ডে বিভিন্ন জন্মগতত্রুটি (ডেভেলপমেন্টাল এ্যানোমালি) থাকতে পারে। এর মধ্যে হৃদপিন্ডের মধ্যে ছিদ্র (অ্যাট্রিয়াল সেপটাল ডিফেক্ট, ভেন্ট্রিকুলার, সেপটাল ডিফেক্ট), ট্রেটালজী অফ ফ্যালট, প্যাটেন্ট ডাক্টাস আর্টারিওসাস ইত্যাদি উলেস্নখযোগ্য। এই সব জন্মগত হৃদরোগের ত্রুটির কারণে একদিকে যেমন শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি বাধাগ্রস্থ হয়, তেমনি ধীরে ধীরে এই ত্রুটিসমূহ অনিরাময়যোগ্য হয়ে যায়। যার পরিণাম নিশ্চিত মৃত্যু। অনিরাময়যোগ্য হওয়ার পূর্বে যদি যথাযথ চিকিৎসা যেমন-কার্ডিয়াক সার্জারী বা ডিভাইসক্লোজার করা যায় তবে রোগীরা সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন লাভ করতে পারে।

৬. থ্যালাসেমিয়া

থ্যালাসেমিয়া  একটি বংশগত রক্তের রোগ। এই রোগে রক্তে অক্সিজেন পরিবহনকারী হিমোগ্লোবিন কণার উৎপাদনে ত্রুটি হয়। থ্যালাসেমিয়া ধারণকারী মানুষ সাধারণত রক্তে অক্সিজেনস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়াতে ভুগে থাকেন। অ্যানিমিয়ার ফলে অবসাদগ্রস্ততা থেকে শুরু করে অঙ্গহানি ঘটতে পারে। থ্যালাসেমিয়া দুইটি প্রধান ধরনের হতে পারে: আলফা থ্যালাসেমিয়া ও বেটা থ্যালাসেমিয়া। সাধারণভাবে আলফা থ্যালাসেমিয়া বেটা থ্যালাসেমিয়া থেকে কম তীব্র। আলফা থ্যালাসেমিয়াবিশিষ্ট ব্যক্তির ক্ষেত্রে রোগের উপসর্গ মৃদু বা মাঝারি প্রকৃতির হয়। অন্যদিকে বেটা থ্যালাসেমিয়ার ক্ষেত্রে রোগের তীব্রতা বা প্রকোপ অনেক বেশি; এক-দুই বছরের শিশুর ক্ষেত্রে ঠিকমত চিকিৎসা না করলে এটি শিশুর মৃত্যুর কারণ হতে পারে। এ রোগে আক্রান্ত শিশুরা ফ্যাকাসে ও দুর্বলতা প্রকাশ পায় এবং শারীরিক বৃদ্ধি কমে যায়। প্লীহা বড় হয়ে পেট ফুলে যায়। অস্থি চওড়া হয়ে বিকৃত আকার ধারন করে এবং শারীরিক বৃদ্ধি ব্যহত হয়। থ্যালাসেমিয়া মেজরে নিয়মিত রক্ত সঞ্চালন প্রধান চিকিৎসা। অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন থ্যালাসেমিয়ার একটি কার্যকরী চিকিৎসা। থ্যালাসেমিয়া নিরাময়যোগ্য। তবে যেহেতু এটি একটি জন্মগত সমস্যা, যদি তার জিনগত সমস্যাকে পরিবর্তন করা না হয়, অর্থাৎ যে অঙ্গ দিয়ে সমস্যাযুক্ত হিমোগ্লোবিন তৈরি হচ্ছে, সে অঙ্গ মানে বোনমেরু (অস্থিমজ্জা), এটাকে যদি অস্থিমজ্জা সংযোজনের মাধ্যমে পরিবর্তন করা যায়, তাহলে একে সম্পূর্ণ নিরাময় করা সম্ভব।